ফেসবুক মার্কেটিং কি? কিভাবে ফেসবুক মার্কেটিং করবেন?
আপনি কি ইন্টারনেট বিপণন কিংবা ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চাইছেন? উত্তর হ্যাঁ হয়ে থাকলে আপনি কখনো না কখনো অবশ্যই শুনেছেন যে, আপনার কোম্পানির নামে একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। সেই সাথে আপনি নিশ্চয় এটাও শুনেছেন যে, ফেসবুকে প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন দিয়ে ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্য পন্য সহজে বিক্রি করা যায়।
ফেসবুক বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। প্রায় ২.২৭ বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহার করছে। আজকাল আমাদের দেশে ১০ বছরের ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে যুবক বৃদ্ধ প্রায় সবাই ফেসবুক ব্যবহার করছে। প্রতিদিন মিনিমাম ৩০ মিনিট সময় ফেসবুকে ব্যয় করে না, এমন লোকের সংখ্যা আমাদের দেশে খুব কম আছে।
আর সেই সুযোগে ফেসবুককে কাজে লাগিয়ে ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের পন্য সহজে আমাদের কাছে পৌছে দিচ্ছে। বিশেষকরে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারনে ফেসবুকের মাধ্যমে ডিজিটিাল মার্কেটিং বর্তমানে বেশ সহজ হয়ে উঠেছে।
এগুলো আপনার প্রয়োজন হতে পারে -
ফেসবুক এখন যতটা ব্যক্তিগত কারনে ব্যবহার করা হয়, তার চাইতে ব্যবসায়িক কাজে কয়েকগুন বেশি ব্যবহার করা হয়। বিশেষকরে ফেসবুক পেজ ও ফেসবুক গ্রুপ এখন প্রফেশনাল কাজে অধিক ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে ফেসবুক ঘিরে নানান ধরনের ব্যবসা বানিজ্য পরিচালিত হচ্ছে। যত দিন যাবে ফেসবুক মার্কেটিং এর চাহিদা অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে।
এগুলো আপনার প্রয়োজন হতে পারে -
ফেসবুক এখন যতটা ব্যক্তিগত কারনে ব্যবহার করা হয়, তার চাইতে ব্যবসায়িক কাজে কয়েকগুন বেশি ব্যবহার করা হয়। বিশেষকরে ফেসবুক পেজ ও ফেসবুক গ্রুপ এখন প্রফেশনাল কাজে অধিক ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে ফেসবুক ঘিরে নানান ধরনের ব্যবসা বানিজ্য পরিচালিত হচ্ছে। যত দিন যাবে ফেসবুক মার্কেটিং এর চাহিদা অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে।
কিভাবে আপনার কোম্পানি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বিপণন এর সুবিধার্থে ফেসবুক ব্যবহার করবেন, আজকের পোস্টে আমি সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাছাড়া ফেসবুক মার্কেটিং এর কি কি সুবিধা রয়েছে, সে বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব।
ফেসবুক মার্কেটিং কি?
ফেসবুক মার্কেটিং বুঝার আগে আপনাকে মার্কেটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়টি বুঝতে হবে। মার্কেটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়টি বুঝতে পারলে ফেসবুক মার্কেটিং বুঝতে আপনার কোন সমস্যা হবে না। কাজেই আগে আমরা মার্কেটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জেনে নেই।
মার্কেটিং কি?
সাধারণত কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পন্য বা প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য সেগুলোর বিজ্ঞাপন ও প্রচারের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌছে দেওয়াকে মার্কেটিং বলে। আধিকাল থেকে মানুষ তার ব্যবসার উন্নতির জন্য বিভিন্ন ধরনের মার্কেটিং করে আসছে। বর্তমানে মানুষ তার ব্যবসার প্রচার করার জন্য সময়ে সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল টেকনিক অবলম্বন করছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
এক সময় ছিল যখন ব্যবসায়িরা তাদের পন্য বিক্রয়ের জন্য ফেরিওয়ালাদের দিয়ে বাড়ি বাড়ি পন্য পাঠাতো। তারপর ধীরে ধীরে রেডিও ও টেলিভিশন আবিষ্কার হওয়ার পর মানুষ তার ব্যবসার পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্য রেডিও এবং টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিতে থাকে। কালক্রমে ইন্টারনেট আবিষ্কার হওয়ার পর ব্যবসায়িরা তাদের পন্যের প্রচারের জন্য ইন্টারনেটকে বেছে নেয়। আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে পন্যের প্রচার ঘটিয়ে সেই পন্য মানুষের কাছে বিক্রি করার কৌশলকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।
ফেসবুক মার্কেটিং কাকে বলে?
আমার মনেহয় আপনি ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে ইতোপূর্বে বুঝে গেছেন। ফেসবুকের মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহারকারির কাছে কোন প্রতিষ্ঠানের পন্য বা সেবা প্রচার করাকে ফেসবুক মার্কেটিং বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে। সাধারণত দুটি উপায়ে ফেসবুক মার্কেটিং করা যায়। একটি হচ্ছে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এবং অপরটি পেইড ফেসবুক মার্কেটিং।
তাছাড়া আপনি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করেও আপনার পন্যের প্রচার ঘটাতে পারেন। এ ছাড়াও ফেসবুক প্রোফাইল ও ফেসবুক ম্যাসেজঞ্জার দিয়ে আপনি ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন। সাধারণত ছোট খাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করে থাকে।
ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং
আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ফেসবুক পেজ খোলে সেই পেজের মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠানের পন্য প্রচার করাই হচ্ছে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং। আপনার ফেসবুক পেজে প্রচুর পরিমানে ফ্যান ফলোয়ার থাকলে খুব সহজে আপনি ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন।তাছাড়া আপনি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করেও আপনার পন্যের প্রচার ঘটাতে পারেন। এ ছাড়াও ফেসবুক প্রোফাইল ও ফেসবুক ম্যাসেজঞ্জার দিয়ে আপনি ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন। সাধারণত ছোট খাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করে থাকে।
পেইড ফেসবুক মার্কেটিং
টাকার বিনিময় ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় তাকেই ফেসবুক পেইড মার্কেটিং বলে। যে কোন ধরণের বিজ্ঞাপন ফেসবুকে টাকার মাধ্যমে দেয়া যায়। এ ধরণের বিজ্ঞাপন সাধারণত ফেসবুক নিউজফিডে বিভিন্ন পন্যের স্পন্সরড পোষ্ট হিসেবে শো হয় এবং ফেসবুক এর ডান পাশে বিভিন্ন পন্যের ছবি বা অফার আকারে শো হয়।
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। ফেসবুক প্রোফাইলের মাধ্যমে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায় না। সে জন্য প্রথমে আপনার কোম্পানির নামে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিতে হবে। তারপর ফেসবুক পেজে আপনার পন্যের বিস্তারিত তথ্য সংযোজন করে আপনার পন্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।
ফেসবুক মার্কেটিং কেন করবেন?
আমি আগেও বলেছি ফেসবুকে প্রায় ২.২৭ বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহার করছে। কেন ফেসবুক মার্কেটিং করবেন, সেটা বুঝার জন্য নিচের ফেসবুক পরিসংখ্যানটি একবার দেখে নেওয়া যাক।
উপররে চিত্রটি ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। আমাদের দেশে চলতি ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ৩,৮৪,৭৫,০০০ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেছে। যেটি আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২২.৬% এর বেশি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৭০.৯% পুরুষ এবং ২৯.১% মহিলা, যাদের অধিকাংশ ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সের।
এখন আপনি নিজেই বলুন, আপনার পন্যের প্রচার করানোর জন্য কেন ফেসবুক মার্কেটিং করবেন না? আপনি ঘরে বসে ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রায় ৪ কোটি মানুষের কাছে আপনার পন্য এর প্রচার ঘটাতে পারবেন। আমার মনেহয় পন্যের বিজ্ঞাপন বা প্রচার ঘটানোর জন্য এর চাইতে সহজ কোন উপায় আমাদের দেশে নেই।
আপনার কোম্পানির নামে কোন ফেসবুক পেজ থাকলে এবং সেই পেজে প্রচুর পরিমানে লাইক থাকলে কোন টাকা পয়সা খরছ না করেই আপনি নিজে নিজে আপনার পন্যের প্রচার করতে পারবেন। তবে আপনার ফেসবুক পেজে ফ্যান ফলোয়ার না থাকলে এই কাজটি বিনা মূল্যে করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে আপনাকে ফেসবুক পেড মার্কেটিং/ফেসবুক বিজ্ঞাপন এর হেল্প নিতে হবে।
ফেসবুক পেইড মার্কেটিং এর সুবিধা কি?
বিভিন্ন উপায়ে আপনি ফেসবুক পেইড মার্কেটিং করতে পারেন। আপনি চাইলে এফিলেয়েট মার্কেটিং করে আপনার পন্যের প্রচার ঘটাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনার পন্য প্রচার করার জন্য বিভিন্ন ফেসবুক মার্কেটারদের সাহায্য নিতে হবে। তখন তারা তাদের বিভিন্ন ফেসবুক পেজে আপনার পন্যটির প্রচার করবে এবং সেখান থেকে আপনার পন্যটি বিক্রি হবে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ফেসবুক মার্কেটারদের সাথে কন্টাকের মাধ্যমে অথবা কমিশনের ভিত্তিতে টাকা পরিশোধ করতে হবে।
তাছাড়া আপনি চাইলে ফেসবুক এডম্যানেজার ব্যবহার করে কিছু টাকা খরছ করে সরাসরি আপনার পন্যের বিজ্ঞাপন ফেসবুকে দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রেও আপনি দুটি উপায় অবলম্বন করতে পারেন। প্রথমে আপনার ফেসবুক পেজের বিজ্ঞাপন দিয়ে পেজে লাইক ও ফ্যান ফলোয়ার বৃদ্ধি করে নিতে পারেন, অথবা সরাসরি পন্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। সাধারণত ফেসবুকে পন্যের বিজ্ঞাপন দেওয়াটাই ভালো। কারণ আপনার প্রোডাক্টের কোয়ালিটি ভালো হলে, প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন ও বিক্রি হওয়ার পাশাপাশি ফেসবুক পেজের লাইক অটোমেটিক বাড়তে থাকে।
এছাড়াও ফেসবুক পেইড মার্কেটিং এর অনেক সুবিধা রয়েছে। যেমন ধরুন- আপনার একটি শাড়ীর দোকান আছে। এ ক্ষেত্রে মহিলারা হবে আপনার টার্গেট করা কাস্টোমার। কারণ খুব কম পুরুষ আছে যারা তাদের স্ত্রী ও মেয়ের জন্য শাড়ী ক্রয় করে। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মহিলারা তাদের নিজের শাড়ী নিজেই ক্রয় করে থাকে।
এ ক্ষেত্রে আপনি ফেসবুক এড ক্যাম্পেইন ব্যবহার করে শুধুমাত্র মহিলাদের টার্গেট করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। তখন ফেসবুক আপনার বিজ্ঞাপনটি শুধুমাত্র মহিলাদের ফেসবুক একাউন্টে শো করবে। যার ফলে সব জায়গাতে বিজ্ঞাপন শো না হওয়ার কারনে আপনার খরছ অনেকাংশে কমে যাবে।
এছাড়াও আপনি যদি মনেকরেন যে, আপনার শাড়ীগুলো শুধুমাত্র ৩০ বছরের অধিক মাহিলাদের ব্যবহারের উপযোগি। তাহলে আপনার টার্গেটেড কাস্টোমার হবে ৩০ বছরের অধিক বয়সের মহিলা। কারণ সাধারণ নিয়মে বয়স্ক মহিলাদের শাড়ী কম বয়স্ক মহিলার কিনতে চাইবে না। এ ক্ষেত্রে ফেসবুক শুধুমাত্র ৩০ বছরের অধিক বয়সের মাহিলাদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপন শো করার সুযোগ আপনাকে দিচ্ছে। অর্থাৎ আপনার বিজ্ঞাপন ৩০ বছরের কম বয়স্ক মহিলার ফেসবুক প্রোফাইলে শো হবে না।
তাছাড়াও আপনার শপিং মলটি কোন স্থানীয় এলাকায় হয়ে থাকলে, আপনি শুধুমাত্র ঐ এলাকার কাস্টোমারদের টার্গেট করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। কোন নির্দিষ্ট এলাকা টার্গেট করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিলে সেই বিজ্ঞাপন ঐ এলাকার ফেসবুক ব্যবহারকারী ছাড়া অন্য কারো কাছে শো হবে না।
এভাবে আপনার পছন্দমত বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর কাস্টোমারদের টার্গেড করে আপনি ফেসবুক পেইড মার্কেটিং করতে পারবেন। এতকরে আপনার খরছ কম হবে এবং অধিক পরিমানে প্রোডাক্ট সেল করতে সক্ষম হবেন।
এছাড়াও ফেসবুক পেইড মার্কেটিং এর অনেক সুবিধা রয়েছে। যেমন ধরুন- আপনার একটি শাড়ীর দোকান আছে। এ ক্ষেত্রে মহিলারা হবে আপনার টার্গেট করা কাস্টোমার। কারণ খুব কম পুরুষ আছে যারা তাদের স্ত্রী ও মেয়ের জন্য শাড়ী ক্রয় করে। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মহিলারা তাদের নিজের শাড়ী নিজেই ক্রয় করে থাকে।
এ ক্ষেত্রে আপনি ফেসবুক এড ক্যাম্পেইন ব্যবহার করে শুধুমাত্র মহিলাদের টার্গেট করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। তখন ফেসবুক আপনার বিজ্ঞাপনটি শুধুমাত্র মহিলাদের ফেসবুক একাউন্টে শো করবে। যার ফলে সব জায়গাতে বিজ্ঞাপন শো না হওয়ার কারনে আপনার খরছ অনেকাংশে কমে যাবে।
এছাড়াও আপনি যদি মনেকরেন যে, আপনার শাড়ীগুলো শুধুমাত্র ৩০ বছরের অধিক মাহিলাদের ব্যবহারের উপযোগি। তাহলে আপনার টার্গেটেড কাস্টোমার হবে ৩০ বছরের অধিক বয়সের মহিলা। কারণ সাধারণ নিয়মে বয়স্ক মহিলাদের শাড়ী কম বয়স্ক মহিলার কিনতে চাইবে না। এ ক্ষেত্রে ফেসবুক শুধুমাত্র ৩০ বছরের অধিক বয়সের মাহিলাদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপন শো করার সুযোগ আপনাকে দিচ্ছে। অর্থাৎ আপনার বিজ্ঞাপন ৩০ বছরের কম বয়স্ক মহিলার ফেসবুক প্রোফাইলে শো হবে না।
তাছাড়াও আপনার শপিং মলটি কোন স্থানীয় এলাকায় হয়ে থাকলে, আপনি শুধুমাত্র ঐ এলাকার কাস্টোমারদের টার্গেট করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। কোন নির্দিষ্ট এলাকা টার্গেট করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিলে সেই বিজ্ঞাপন ঐ এলাকার ফেসবুক ব্যবহারকারী ছাড়া অন্য কারো কাছে শো হবে না।
এভাবে আপনার পছন্দমত বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর কাস্টোমারদের টার্গেড করে আপনি ফেসবুক পেইড মার্কেটিং করতে পারবেন। এতকরে আপনার খরছ কম হবে এবং অধিক পরিমানে প্রোডাক্ট সেল করতে সক্ষম হবেন।
ফেসবুক পেইড মার্কেটিং এর সুবিধা কি কি-
- ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি হওয়া সহজে প্রচার ঘটানো যায়।
- যেকোনো জায়গা, শহর, দেশ বা লোকাল এরিয়া টার্গেট করে পন্যের বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়।
- নির্ধারিত পন্যের টার্গেট করা মানুষের কাছে প্রোডাক্ট পৌছানো সম্ভব হয়।
- বিভিন্ন বয়সের মানুষকে টার্গেট করে প্রোডাক্ট মার্কেটিং করা যায়।
- অন্যান্য মার্কেটিং এর তুলনায় অল্প খরছে ফেসবুক বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়।
- অনলাইনে কোম্পানির ব্রান্ড তৈরি করার জন্য ফেসবুক সবচাইতে সহজ মাধ্যম।
- ব্লগ/ওয়েবসাইট প্রচারের সহজ মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক।
এ ছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ফেসবুক মার্কেটিং এর অনেক সুবিধা রয়েছে। যত দিন যাবে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং ফেসবুক মার্কেটিং এর চাহিদা তত বাড়তে থাকবে। কাজেই ফেসবুকে আপনার কোম্পানির ব্রান্ড তৈরি করতে পারলে, ভবিষ্যতে ডিজিটাল মার্কেটিং করাটা আপনার জন্য বেশ সহজ হবে।
কিভাবে ফেসবুক মার্কেটিং করবেন?
ফেসবুক মার্কেটিং এর নিয়ম সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে যে, আপনি কেন ফেসবুক মার্কেটিং করতে চাইছেন। ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে আমি আপনাকে একটি প্রশ্ন করছি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি যে ধরনের ব্যবসা করছেন, সেই ব্যবসার বা প্রোডাক্ট এর কাস্টমার ফেসবুকে আছে কি না?
আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে, তাহলে আপনার জন্য ফেসবুক মার্কেটিং এর প্রয়োজন আছে। আপনি হয়ত আমার প্রশ্নের উত্তর ভালোভাবে বুঝতে পারেননি। আমি উদাহরনের মাধ্যমে বিষয়টি আরো ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি।
ধরুন, আপনার একটি টি-শার্ট এর শপ আছে। এখন আপনাকে আগে জেনে নিতে হবে যে, টি-শার্ট কেনার মত কাস্টোমার ফেসবুকে আছে কি না? এখন আপনি সহজে বলবেন, ফেসবুক যেহেতু তরুন ও যুবকরা বেশি ব্যবহার করছে সেহেতু টি-শার্ট কেনার মত কাস্টোমার অবশ্যই ফেসবুকে আছে।
ঠিক একইভাবে আপনার যে কোম্পানি আছে সেই কোম্পানির প্রোডাক্ট ক্রয় করার মত কাস্টোমার ফেসবুক ব্যবহার করছে কি না, সেটা ফেসবুক মার্কেটিং করার আগে জেনে নিতে হবে। কারণ যেই প্রোডাক্ট এর কাস্টোমার ফেসবুকে নেই, সেই প্রোডাক্ট এর ফেসবুক মার্কেটিং করে আপনার কোন লাভ হবে না। বরংচ ফেসবুক মার্কেটিং করে আপনার টাকা অযথা নষ্ট হবে।
এখন আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয় এবং ফেসবুকে আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করার মত কাস্টোমার থাকে, তাহলে নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করে আপনি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারেন।
কিভাবে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করবেন?
প্রথমত আপনার কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান ও দোকানের নামে একটি ফেসবুক ব্রান্ড পেজ তৈরি করে নিতে হবে। ফেসবুকে পেজ তৈরি করে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যত ইনফরমেশন আছে, সবগুলো ভালোভাবে সেট করে নিতে হবে।
কখন আপনার দোকান খোলা থাকে, কখন বন্ধ করা হয়, কি ধরনের প্রোডাক্ট আপনি সেল করেন ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিতে হবে। তারপর ফেসবুক পেজে আপনার বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়মিত পোস্ট করতে হবে। পোস্ট করার সময় অবশ্যই প্রোডাক্ট এর বিভিন্ন ভালো দিকগুলো তুলে ধরতে হবে।
তাছাড়া বিভিন্ন সময় আপনার দোকানের প্রোডাক্ট এর যে সমস্ত অফার দেওয়া হয়, সেই অফার সম্পর্কে ফেসবুকে পেজে আপডেট দিতে থাকবেন। তাহলে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা সহজে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে জেনে নিয়ে ক্রয় করার জন্য আগ্রহ দেখাবে।
কিভাবে ফেসবুক পেজ তৈরি করবেন?
এখানে আমি ফেসবুক পেজ তৈরির পদ্ধতি শেয়ার করব না। কারণ এ বিষয়টি আপনারা সবাই মোটামুটি ভালোভাবে জানেন। সাধারণত অধিকাংশ কোম্পানি ফেসবুক ব্রান্ড পেজ তৈরি করার সময় যে সমস্ত ভূল করে থাকেন, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। নিচের টিপসগুলো আপনার সেই ভুল এড়িয়ে চলতে হেল্প করবে।
প্রোফাইল পিকচার ও কভার ছবি
ফেসবুক ব্রান্ড পেজ তৈরি করার পর অবশ্যই আপনার কোম্পানির একটি ভালোমানের লোগো এবং কভার ছবি যুক্ত করে নিবেন। কারণ আপনার কোম্পানির লোগো এবং কভার ছবি ফেসবুকে ব্রান্ড তৈরি করতে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।
About Us সেকশন
এই সেকশনটা প্রত্যেকটি ব্রান্ড ফেসবুক পেজের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কোম্পানি কি ধরনের কাজ করে বা কি ধরনের প্রোডাক্ট সেল করে, সেটা About Us সেকশন সংক্ষেপে লিখে রাখবেন। তাহলে যেকোন লোক আপনার ফেসবুক পেজ ভিজিট করার পর সহজে আপনার কোম্পানি সম্পর্কে ধারনা নিতে পারবে।
বাটন ও কাস্টমাইজ ট্যাব
প্রতিটি ফেসবুক পেজেই কল-টু-অ্যাকশন বাটন ও কাস্টমাইজ করার ট্যাব থাকে। এই ধরনের বাটনের মাধ্যমে ফেসবুক পেজের ভিজিটর আপনার সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ পায়। সাধারণত একটি ফেসবুক পেজে নিচের বাটনগুলো যুক্ত করার অপশন থাকে।
- কনটাক্ট আস
- শপ নাউ
- সেন্ড ম্যাসেজ
- বুক নাউ
- সাইন আপ
- ওয়াচ ভিডিও
- প্লে গেমস
আপনার চাহিদানুসারে উপরের যেকোন বাটন যুক্ত করে নিতে পারেন। এই বাটন যুক্ত করার ফলে আপনার ফেসবুক পেজের ভিজিটর আপনার সাথে দ্রুত যোগাযোগ করতে পারবে।
সঠিক পেজ URL গঠন
ফেসবুক পেজের ইউআরএল তৈরীর ক্ষেত্রে অবশ্যই যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত, সহজবোধ্য এবং বিষয় সম্পৃক্ত URL নির্বাচন করতে হয়। আপনার যদি কোন ওয়েবসাইট থেকে থাকে, তাহলে সেটির সাথে মিল রেখে URL তৈরি করে নিবেন। ওয়েবসাইট না থাকলে অবশ্যই কোম্পানির নামে সাথে মিল রেখে ফেসবুক পেজ URL তৈরি করবেন।
টাইমলাইনে বিভিন্ন তথ্য সংযোজন করা
আপনার কোম্পানির ফেসবুক পেজে নিয়মিত আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের আপডেট দিতে থাকবেন। ফেসবুক পেজের টাইমলাইন যত আপডেট রাখবেন, আপনার পেজের এনগেজমেন্ট তত বৃদ্ধি পাবে।
নিচের বিষয়গুলো ফেসবুক পেজের টাইমলাইনে শেয়ার করতে পারেন-
- নিত্য নতুন প্রোডাক্ট এর ঘোষনা ও বিবরণ।
- ব্লগের বিভিন্ন পোস্ট।
- বিভিন্ন অফার এর কোপন কোড।
- প্রোডাক্ট এর ছবি।
- বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর রিভিউ ভিডিও।
তাছাড়া আপনার ফেসবুক পেজের Statistics হতে দেখে নিবেন, কাস্টোমাররা কোন ধরনের প্রোডাক্ট বেশি পছন্দ করছে। যে ধরনের প্রোডাক্টগুলো বেশি বিক্রি হবে সেই ধরনের প্রোডাক্ট সম্পর্কে ফেসবুকে পেজের টাইমলাইনে আপডেট শেয়ার করলে আপনি সহজে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করে সফল হতে পারবেন।
ফেসবু গ্রুপ মার্কেটিং করা
আপনার কোম্পানির নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করেও আপনি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারেন। তাছাড়া আপনি চাইলে আপনার প্রোডাক্ট রিলেটেড বিভিন্ন ফেসবুকে গ্রুপে জয়েন করে আপনার প্রোডাক্ট ফ্রিতে প্রোমোশন করতে পারেন। যে সকল ফেসবুক গ্রুপে প্রচুর পরিমানে মেম্বার আছে, সেই সকল ফেসবুক গ্রুপে আপনার প্রোডাক্ট শেয়ার করে সহজে আপনার কোম্পানির পরিচিতি বৃদ্ধি করে নেওয়ার পাশাপাশি প্রোডাক্ট সেল করেও নিতে পারবেন।
কিভাবে ফেসবুক পেইড মার্কেটিং করবেন?
আমি আগেই বলেছি, টাকার বিনিময়ে ফেসবুকে কোন প্রোডাক্ট বা ফেসবুক পেজের বিজ্ঞাপন দেওয়াকে ফেসবুক পেইড মার্কেটিং বলে। ফেসবুক পেইড মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে তেমন কোন পরিশ্রম বা টেকনিক অবলম্বন করার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র আপনার প্রোডাক্ট অনুসারে কাস্টোমারদের টার্গেট করে ফেসবুক এড ক্যাম্পেন তৈরি করতে পারলেই, ফেসবুক পেইড মার্কেটিং এর কাজ হয়ে যায়।
সাধারণত ৫ ডলার থেকে শুরু করে লাখ লাখ ডলার খরছ করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে আপনি যত বেশি ডলার ইনভেস্ট করবেন, আপনার প্রোডাক্ট তত বেশি মানুষের কাছে পৌছবে। কত টাকা বিজ্ঞাপন দেবেন, সেটা আপনার বাজেট ও চাহিদার উপর ডিপেন্ড করবে।
উপরের চিত্রটি দেখুন, এটি ফেসবুক হতে নেওয়া হয়েছে। এটি দেখতে অনেকটা সাধারণ ফেসবুক পোস্ট এর মত লাগছে। কিন্তু একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, পোস্টের সাথে ছোট করে "Sponsored" লেখা আছে। ফেসবুকে বুস্ট করা পোস্টগুলোতে এভাবে ছোট করে "Sponsored" লেখা থাকে।
কিভাবে ফেসবুকে একটি এড ক্যাম্পেন তৈরি করতে হয়, সে বিষয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা করতে পারছি। ফেসবুক এড ক্যাম্পেন তৈরি করার বিষয়ে ভবিষ্যতে আমরা একটি বিস্তারিত পোস্ট শেয়ার করার চেষ্টা করব।
তবে ফেসবুকে এড ক্যাম্পেন তৈরি করা খুব কঠিন কিছু নয়। আপনি নিজে নিজে ট্রাই করলে খুব সহজে একটি ফেসবুক এড ক্যাম্পেন তৈরি করতে পারবেন।
শেষ কথা
আশাকরি আমি আপনাদেরকে ফেসবুক মার্কেটিং বিষয়ে কিছু ধারনা দিতে পেরেছি। ফেসবুক এড ক্যাম্পেন তৈরি বা কিভাবে একটি ফেসবুক এড তৈরি করতে হয়, সে বিষয়ে জানার জন্য পাঠকের নিকট হতে সাড়া পেলে, আমরা খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করার চেষ্টা করব।
thanks
সুন্দর একটি পোস্ট
অসংখ্য ধন্যবাদ...
খুব ভালো লাগছে অনেক কিছু যান্তে পারলাম।
আমি যাদি ডিজিটাল মার্কেটিং ভালো করে শিখতে চাই সাধারণত কতো দিন সময় লাগবে?
ভালোভাবে চেষ্টা করলে ৫/৬ মাসে শিখতে পারবেন। তবে এটা অনেকটা আপনার চেষ্টার উপর ডিপেন্ড করবে।
খুব ভালো লাগছে অনেক কিছু যান্তে পারলাম।
R i g h t