ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?
কখনো না কখনো আপনার মনে একবার হলেও এই প্রশ্ন জেগেছে যে, ইন্টারনেট কি এবং কিভাবে ইন্টারনেট কাজ করে? তথ্য প্রযুক্তির বর্তমান যুগে আমরা প্রতিনিয়ত যে সমস্ত ইন্টারনেট ব্যবহার করছি সেই ইন্টারনেট কোথায় থেকে আসছে এবং এসব ইন্টারনেট এর মালিক কে? আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আমরা যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করছি, তাদের অধিকাংশ লোক এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না!!
আজ আমরা খুব সহজ এবং সাধারণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। আপনার কাছে বিষয়টি খুব সহজ মনেহতে পারে। তবে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর ইন্টারনেট সম্পর্কে অনেক তথ্য জানার পর আপনি অবাক না হয়ে পারবেন না। ইন্টানেট কিভাবে কাজ করে, কোথায় থেকে ইন্টারনেট আসে, কিভাবে ইন্টারনেট আবিষ্কার হয়েছে? এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি ইন্টারনেট এর বেসিক কিছু বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
ইন্টারনেট কি?
ইন্টারনেট কি সেটা বুঝতে হলে আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে? ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে সেটা বুঝতে পারলে ইন্টানেট এর সংজ্ঞা অটোমেটি পেয়ে যাবেন। তবে এতটুকু মনে রাখবেন, ইন্টারনেট হচ্ছে পুরো বিশ্বের সকল কম্পিউটার ও স্মার্টফোন একটি আরেকটির সাথে যুক্ত করার এক ধরনের নেটওয়ার্ক। তবে এখানে পুরো বিশ্বর কম্পিউটার বলতে আপনার কম্পিউটারের সাথে আমার কম্পিউটার যুক্ত করা বুঝানো হয়নি। এখানে আপনার কম্পিউটার বিশ্বের সকল সার্ভার কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করা বুঝানো হয়েছে।
মনে করুন, আপনার একটি ১৬ জিবি মেমোরি কার্ড আছে। উক্ত মেমোরি কার্ডের ভীতরে রাখা ফাইলগুলো দেখার জন্য মেমোরি কার্ডটি কোন একটি মোবাইল অথবা কম্পিউটারে লাগাতে হবে। ঠিক একইভাবে বিশ্বের যেকোন প্রান্তের কম্পিউটারে রাখা কোন ফাইল বা ভিডিও দেখার জন্য আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলে ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে। যখন আপনার কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন থাকবে তখন আপনি বিশ্বের যেকোন প্রান্তের কম্পিউটার সার্ভারে রাখা ফাইল দেখতে ও পড়তে পারবেন।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, আমার কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে আমি অনলাইনে যেকোন কিছু করতে পারব, সেটা আপনি সহ সবাই জানে!! কিন্তু সেই ইন্টারনেট কিভাবে অন্য প্রান্তের ফাইল আমার কম্পিউটারের নিয়ে আসে? এই বিষয়টি জানার জন্য ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে সেটা জেনে নিতে হবে। ইন্টানেট কিভাবে কাজ করে সেটা জানার পূর্বে আমরা প্রথমে ইন্টারনেট এর কিছু বেসিক বিষয় জেনে নিব।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, আমার কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে আমি অনলাইনে যেকোন কিছু করতে পারব, সেটা আপনি সহ সবাই জানে!! কিন্তু সেই ইন্টারনেট কিভাবে অন্য প্রান্তের ফাইল আমার কম্পিউটারের নিয়ে আসে? এই বিষয়টি জানার জন্য ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে সেটা জেনে নিতে হবে। ইন্টানেট কিভাবে কাজ করে সেটা জানার পূর্বে আমরা প্রথমে ইন্টারনেট এর কিছু বেসিক বিষয় জেনে নিব।
ইন্টারনেট কত সালে চালু হয়?
‘ডারপা‘ নামে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের একটি গবেষণা প্রকল্প থেকে ইন্টারনেটের সুচনা হয়েছিল। তখন এর নাম ছিল আরপানেট, ১৯৬৯ সালের ১৪ই জানুয়ারি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় লস এঞ্জেলেস এবং স্ট্যানফোর্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর মধ্যে প্রথম নেটওয়ার্ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়। প্রথম আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছিল ২৫শে জুলাই ১৯৭৩ সালে।
১৯৮১ সাল নাগাদ আইবিএম-এর মতো কোম্পানিগুলো আরো কিছু নেটওয়ার্ক চালু করে। যেমন- বিটনেট, এদের নেটওয়ার্কে একসময় ৪৯টি দেশের এক হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত ছিল। ২২শে সেপ্টেম্বর ১৯৯২ তারিখে সারা ইউরোপ জুড়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু হয় এনএস্এফনেটের আদলে – যার নাম ছিল ই-বোন।
১৯৯৩ সালের ২২শে এপ্রিল উইনডোজ অপারেটিং সিস্টেমে প্রথম ওয়েব ব্রাউজার চালু হয় - যার নাম ছিল মোজাইক। ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে এনএসএফনেট এবং ই-বোন বন্ধ হয়ে যায় আর তাদের জায়গা নেয় পরস্পর আন্তঃসংযুক্ত বাণিজ্যিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা। এভাবে ইন্টারনেট সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালু হয় ১৯৯৬ সালে।
১৯৮১ সাল নাগাদ আইবিএম-এর মতো কোম্পানিগুলো আরো কিছু নেটওয়ার্ক চালু করে। যেমন- বিটনেট, এদের নেটওয়ার্কে একসময় ৪৯টি দেশের এক হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত ছিল। ২২শে সেপ্টেম্বর ১৯৯২ তারিখে সারা ইউরোপ জুড়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু হয় এনএস্এফনেটের আদলে – যার নাম ছিল ই-বোন।
১৯৯৩ সালের ২২শে এপ্রিল উইনডোজ অপারেটিং সিস্টেমে প্রথম ওয়েব ব্রাউজার চালু হয় - যার নাম ছিল মোজাইক। ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে এনএসএফনেট এবং ই-বোন বন্ধ হয়ে যায় আর তাদের জায়গা নেয় পরস্পর আন্তঃসংযুক্ত বাণিজ্যিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা। এভাবে ইন্টারনেট সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালু হয় ১৯৯৬ সালে।
ইন্টারনেট কে আবিষ্কার করেন?
ইন্টারনেট এর আবিস্কারক বা জনক বলা হয় ভিনটন জি কার্ফ কে। ভিনটন জি কার্ফ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর যখন সোভিয়েত ও যুক্ত রাষ্ট্র যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, সেই কথা বিবেচনা করে ইন্টারনেট আবিষ্কার করা হয়! যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস না হয়! আরপানেটকে বর্তমান আধুনিক ইন্টারনেট এর প্রতিকৃতি তথা মডেল হিসেবে আক্ষায়িত করা হয়। আরপানেটে আধুনিক ইন্টারনেটের মৌলিক পরিকাঠামোটি সর্বপ্রথম প্রকাশ পায়।
ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?
ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে, এটি আমাদের সবচাইতে কৌতুহলি প্রশ্ন? আমরা অধিকাংশ লোক মনেকরি স্যাটেলাইট হচ্ছে ইন্টারনেট এর উৎপত্তি স্থল। অর্থাৎ আমরা মনেকরি যে, স্যাটেলাইট হতে সরাসরি মোবাইল টাওয়ারের সাথে ইন্টারনেট কানেশন হয় এবং সেই টাওয়ার থেকে আমাদের মোবাইল ও কম্পিউটারের ইন্টারনেট কানেটেড হয়।
উপরের চিত্রটি একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। উপরের চিত্রের মধ্যখানে যে ঘরটি দেখতে পাচ্ছেন, মনে করুন সেটি হচ্ছে ডাটা সেন্টার (ডাটা সেন্টার নিয়ে পরে নিচে আলোচনা করব)। এই ডাটা সেন্টার প্রথমে ২২ হাজার মাইল দূরে থাকা স্যাটেলাইটে সিগন্যাল পাঠাবে। তারপর স্যাটেলাইট আবার ২২ হাজার মাইলের বেশি দূরে থাকা ব্যক্তির কাছে থাকা মোবাইলে সিগন্যাল পাঠাল। এই কাজটি ডাটা সেন্টার থেকে যদিও করা সম্ভব, তবে কাজটি অনেক ব্যয়বহুল। যার কারনে ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনে সেবা দেওয়া বর্তমানে প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে
বর্তমানে আমরা যে ইন্টারনেট ব্যবহার করি সেগুলো স্যাটেলাইট হতে আসা ইন্টারনেট নয়। এখন আপনার মনে প্রশ্ন উদয় হতে পারে যে, তাহলে বর্তমানে আমরা কিভাবে এত কমদামে ইন্টারনেট কিনতে পারছি। একটু ধৈর্য্য ধরুন, পুরো বিষয়টি আমি উদাহনের মাধ্যমে আপনাদের বুঝিয়ে দেব।
ধরুন, আমার একটি কম্পিউটার আছে এবং আপনার আরেকটি কম্পিউটার আছে। আপনি থাকেন কোন একটি বাসার ২য় তলায় এবং আমি সেই একই বাসার ৩য় তলায় থাকি। এখন আপনি এবং আমি চাইছি আপনার রুমে না গিয়ে আমি আপনার কম্পিউটারে থাকা সকল ফাইল দেখব এবং আপনি আমার রুমে না গিয়ে ২য় তলা থেকে আমার কম্পিউটারের ফাইল দেখবেন।
এখন এই কাজটি করার জন্য একটি ফাইভার ক্যাবল এর এক প্রান্ত আমার কম্পিউটারে লাগাতে হবে এবং অপর প্রাপ্ত আপনার কম্পিউটারে লাগাতে হবে। তাহলে আপনার এবং আমার কম্পিউটারের মধ্যে লোকাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক (LAN) তৈরি হবে। তখন আপনি আপনার রুমে বসে আমার কম্পিউটারের ফাইল দেখতে পারবেন এবং আমি আমার ঘরে বসে আপনার কম্পিউটারের সকল ফাইল দেখতে পারব। তবে এখানে লোকাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক (LAN) তৈরি করার জন্য শুধুমাত্র ফাইবার কেবল হলেই হবে না। সেই সাথে আরো কিছু টেকনোলজি ব্যবহার করতে হবে।
আপনি হয়ত লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) এর বিষয়ে শুনেছেন। সাধারণত বিভিন্ন অফিসে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) ব্যবহার করা হয়। মূলত একটি অফিসের বিভিন্ন কম্পিউটারের ফাইল নিজ নিজ চেয়ারে বসে যার যার কম্পিউটার হতে অন্য সকল কম্পিউটারের ফাইল একসেস করার জন্য লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) সংযোজক স্থাপন করা হয়। এটিও এক ধরনের ইন্টারনেট। এইভাবে পুরো বিশ্বের ইন্টারনেট কাজ করে।
উপরের চিত্রটি দেখুন। এটি হচ্ছে একটি ফাইভার ক্যাবল। এই ক্যাবল এর একদম সামনের অংশে যে ছোট ছোট তার দেখতে পাচ্ছেন, এগুলোর মধ্যে দিয়ে মূলত এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে নেটওয়ার্ক (ইন্টারনেট কানেকশ) তৈরি হয়। এই ফাইভার ক্যাবলগুলো খুব মজবুত এবং উচ্চ গতি সম্পন্ন হয়। এই ক্যাবলের মধ্যে দিয়ে যেকোন ধরনের ডাটা এক সেকেন্ডে পৃথিবীর এক প্রান্তের কম্পিউটার থেকে অন্য প্রান্তে যেতে পারে।
ইন্টারনেট তৈরি করার জন্য এ ধরনের কোন প্রক্রিয়া নেই। সাধারণত ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে একটি সার্ভার রুম তৈরি করে নেয়। সার্ভার রুম হচ্ছে এক ধরনের প্রচন্ড শক্তিশালি কম্পিউটার। যার ভীতরের অনেক বড় বড় সাইজের হার্ডডিস্ক বা মেমেরি থাকে। তারপর সেই মেমোরিতে অসংখ্য অসংখ্য ফাইল, অডিও এবং ভিডিও সহ আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।
তারপর সেই বিশাল কম্পিউটারের সাথে ফাইভার ক্যাবল সংযুক্ত করে পৃথিবীর সকল প্রান্তে ছড়িয়ে দেয়। তারপর সেই সকল সার্ভার কোম্পানির নিকট থেকে বিভিন্ন দেশের বড় বড় কোম্পানি তাদের সার্ভারে থাকা ফাইল ব্যবহার করার জন্য ইন্টারনেট কিনে নেয়।
ধরুন, ইউটিউব তাদের সার্ভার তৈরি করে সার্ভারের সাথে ফাইভার ক্যাবল যুক্ত করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দিল। তারপর সকল দেশের বিভিন্ন কোম্পানি ইউটিউব এর সার্ভার কিনে ইউটিউবের ফাইবার ক্যাবল এর সাথে আরেকটি ফাইবার ক্যাবল সংযুক্ত করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিল। তারপর স্থানীয় ইন্টারনেট প্রোভাইডাররা দেশের বড় কোম্পানির নিকট থেকে ডাটা কিনে তাদের ফাইভার ক্যাবল এর সাথে আরেকটি ফাইভার ক্যাবল সংযুক্ত করে দিল। তারপর স্থানিয় ইন্টারনেট প্রোভাইডাররা তাদের ফাইবার ক্যাবলের সাথে আরেকটি ফাইভার ক্যাবল সংযুক্ত করে আমাদের ঘরের ইন্টারনেট রাউটারে ফাইভার ক্যাবল যুক্ত করে দিল। এর ফলে ইউটিউব সার্ভারে থাকা সকল ভিডিও এর সাথে আমাদের কম্পিউটার ও মোবাইলের সরাসরি একটি কানেকশ তৈরি হয়ে যায়।
এখানে মোবাইল অপারেট কোম্পানির ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরগুলো দেশের বড় বড় কোম্পানির নিকট থেকে ডাটা কিনে তাদের ফাইভার ক্যাবলের সাথে সংযোগ স্থাপন করে মাটির নিচ দিয়ে ফাইভার টেনে মোবাইল টাওয়ারের সাথে সংযোগ তৈরি করে। তারপর মোবাইল টাওয়ারের মেগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে ঐ সার্ভারের সাথে আমাদের মোবাইলের সংযোগ স্থাপন হয় বিধায় আমরা মোবাইলে সকল তথ্য দেখতে পাই।
উপরের চিত্রের ডানপাশে যে ঘরটি দেখতে পাচ্ছেন সেটি হচ্ছে গুগল ডাটা সেন্টার, যেখানে গুগল এর যাবতীয় তথ্য ও ফাইল সংরক্ষণ করা রয়েছে। ডাটা সেন্টার থেকে ফাইভার ক্যাবল এর মাধ্যমে পানির ও মাটির নিজ দিয়ে নেওয়া যে ক্যাবল দেখতে পাচ্ছেন সেগুলো পৃথিবীর সকল দেশে ছড়ি ছিটিয়ে রয়েছে। এই ক্যাবলগুলোর মধ্যে দিয়েই মূলত গুগল এর সকল তথ্য যাওয়া আসা করে।
উপরের চিত্রে ভালোভাবে দেখুন, গুগল ডাটা সেন্টার হতে বিভিন্ন ধরনের ফাইল ফাইভার ক্যাবল দিয়ে প্রথমে মোবাইলের টাওয়ারে প্রবেশ করছে। তারপর মোবাইল টাওয়ার ম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে গুগল সার্ভারের ডাটা বা ফাইল মোবাইলে প্রবেশে করছে।
এখন আপনার মনে আবার প্রশ্ন জাগতে পারে যে, তাহলে আমরা গুগল ও ইউটিউব ছাড়াও অন্যান্য ওয়েবসাইটের তথ্য কিভাবে দেখতে পাই? আসলে আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে যে সমস্ত ইন্টারনেট ব্যবহার করি সেগুলো কোন নির্দিষ্ট কোম্পানির নয়। আমাদের দেশের ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির ফাইভার ক্যাবল কানেকশন কেনার পর সেগুলো আবার আরেকটি সার্ভার তৈরি করে সবগুলোকে একত্র করে। তারপর সেখান থেকে ফাইভার ক্যাবল সংযোগ স্থাপন করে দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দেয় বলে বিশ্বের সকল ওয়েবসাইটের সাথে আমাদের কম্পিউটার ও মোবাইলের সংযোগ স্থাপিত হয় বিধায় আমরা সকল ধরনের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারি ।
উপরের চিত্রটি একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। উপরের চিত্রের মধ্যখানে যে ঘরটি দেখতে পাচ্ছেন, মনে করুন সেটি হচ্ছে ডাটা সেন্টার (ডাটা সেন্টার নিয়ে পরে নিচে আলোচনা করব)। এই ডাটা সেন্টার প্রথমে ২২ হাজার মাইল দূরে থাকা স্যাটেলাইটে সিগন্যাল পাঠাবে। তারপর স্যাটেলাইট আবার ২২ হাজার মাইলের বেশি দূরে থাকা ব্যক্তির কাছে থাকা মোবাইলে সিগন্যাল পাঠাল। এই কাজটি ডাটা সেন্টার থেকে যদিও করা সম্ভব, তবে কাজটি অনেক ব্যয়বহুল। যার কারনে ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনে সেবা দেওয়া বর্তমানে প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে
বর্তমানে আমরা যে ইন্টারনেট ব্যবহার করি সেগুলো স্যাটেলাইট হতে আসা ইন্টারনেট নয়। এখন আপনার মনে প্রশ্ন উদয় হতে পারে যে, তাহলে বর্তমানে আমরা কিভাবে এত কমদামে ইন্টারনেট কিনতে পারছি। একটু ধৈর্য্য ধরুন, পুরো বিষয়টি আমি উদাহনের মাধ্যমে আপনাদের বুঝিয়ে দেব।
ধরুন, আমার একটি কম্পিউটার আছে এবং আপনার আরেকটি কম্পিউটার আছে। আপনি থাকেন কোন একটি বাসার ২য় তলায় এবং আমি সেই একই বাসার ৩য় তলায় থাকি। এখন আপনি এবং আমি চাইছি আপনার রুমে না গিয়ে আমি আপনার কম্পিউটারে থাকা সকল ফাইল দেখব এবং আপনি আমার রুমে না গিয়ে ২য় তলা থেকে আমার কম্পিউটারের ফাইল দেখবেন।
এখন এই কাজটি করার জন্য একটি ফাইভার ক্যাবল এর এক প্রান্ত আমার কম্পিউটারে লাগাতে হবে এবং অপর প্রাপ্ত আপনার কম্পিউটারে লাগাতে হবে। তাহলে আপনার এবং আমার কম্পিউটারের মধ্যে লোকাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক (LAN) তৈরি হবে। তখন আপনি আপনার রুমে বসে আমার কম্পিউটারের ফাইল দেখতে পারবেন এবং আমি আমার ঘরে বসে আপনার কম্পিউটারের সকল ফাইল দেখতে পারব। তবে এখানে লোকাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক (LAN) তৈরি করার জন্য শুধুমাত্র ফাইবার কেবল হলেই হবে না। সেই সাথে আরো কিছু টেকনোলজি ব্যবহার করতে হবে।
আপনি হয়ত লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) এর বিষয়ে শুনেছেন। সাধারণত বিভিন্ন অফিসে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) ব্যবহার করা হয়। মূলত একটি অফিসের বিভিন্ন কম্পিউটারের ফাইল নিজ নিজ চেয়ারে বসে যার যার কম্পিউটার হতে অন্য সকল কম্পিউটারের ফাইল একসেস করার জন্য লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) সংযোজক স্থাপন করা হয়। এটিও এক ধরনের ইন্টারনেট। এইভাবে পুরো বিশ্বের ইন্টারনেট কাজ করে।
উপরের চিত্রটি দেখুন। এটি হচ্ছে একটি ফাইভার ক্যাবল। এই ক্যাবল এর একদম সামনের অংশে যে ছোট ছোট তার দেখতে পাচ্ছেন, এগুলোর মধ্যে দিয়ে মূলত এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে নেটওয়ার্ক (ইন্টারনেট কানেকশ) তৈরি হয়। এই ফাইভার ক্যাবলগুলো খুব মজবুত এবং উচ্চ গতি সম্পন্ন হয়। এই ক্যাবলের মধ্যে দিয়ে যেকোন ধরনের ডাটা এক সেকেন্ডে পৃথিবীর এক প্রান্তের কম্পিউটার থেকে অন্য প্রান্তে যেতে পারে।
ইন্টারনেট কিভাবে তৈরি হয়?
সাধারনত আমরা বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর এবং ব্রডবেন্ড ইন্টারনেট প্রোভাইডারদের নিকট থেকে বিভিন্ন প্যাকেজের (ডাটা) ইন্টারনেট ভিন্ন ভিন্ন মূল্যে ক্রয় করে থাকি। আমরা মনেকরি ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো ১ জিবি, ২ জিবি, ৫ জিবি এবং ৩০ জিবি সহ বিভিন্ন প্যাকেজের ইন্টারনেট তৈরি করে। আসলে এ ধরনের কিছুই না।ইন্টারনেট তৈরি করার জন্য এ ধরনের কোন প্রক্রিয়া নেই। সাধারণত ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে একটি সার্ভার রুম তৈরি করে নেয়। সার্ভার রুম হচ্ছে এক ধরনের প্রচন্ড শক্তিশালি কম্পিউটার। যার ভীতরের অনেক বড় বড় সাইজের হার্ডডিস্ক বা মেমেরি থাকে। তারপর সেই মেমোরিতে অসংখ্য অসংখ্য ফাইল, অডিও এবং ভিডিও সহ আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।
তারপর সেই বিশাল কম্পিউটারের সাথে ফাইভার ক্যাবল সংযুক্ত করে পৃথিবীর সকল প্রান্তে ছড়িয়ে দেয়। তারপর সেই সকল সার্ভার কোম্পানির নিকট থেকে বিভিন্ন দেশের বড় বড় কোম্পানি তাদের সার্ভারে থাকা ফাইল ব্যবহার করার জন্য ইন্টারনেট কিনে নেয়।
ধরুন, ইউটিউব তাদের সার্ভার তৈরি করে সার্ভারের সাথে ফাইভার ক্যাবল যুক্ত করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দিল। তারপর সকল দেশের বিভিন্ন কোম্পানি ইউটিউব এর সার্ভার কিনে ইউটিউবের ফাইবার ক্যাবল এর সাথে আরেকটি ফাইবার ক্যাবল সংযুক্ত করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিল। তারপর স্থানীয় ইন্টারনেট প্রোভাইডাররা দেশের বড় কোম্পানির নিকট থেকে ডাটা কিনে তাদের ফাইভার ক্যাবল এর সাথে আরেকটি ফাইভার ক্যাবল সংযুক্ত করে দিল। তারপর স্থানিয় ইন্টারনেট প্রোভাইডাররা তাদের ফাইবার ক্যাবলের সাথে আরেকটি ফাইভার ক্যাবল সংযুক্ত করে আমাদের ঘরের ইন্টারনেট রাউটারে ফাইভার ক্যাবল যুক্ত করে দিল। এর ফলে ইউটিউব সার্ভারে থাকা সকল ভিডিও এর সাথে আমাদের কম্পিউটার ও মোবাইলের সরাসরি একটি কানেকশ তৈরি হয়ে যায়।
এখানে মোবাইল অপারেট কোম্পানির ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরগুলো দেশের বড় বড় কোম্পানির নিকট থেকে ডাটা কিনে তাদের ফাইভার ক্যাবলের সাথে সংযোগ স্থাপন করে মাটির নিচ দিয়ে ফাইভার টেনে মোবাইল টাওয়ারের সাথে সংযোগ তৈরি করে। তারপর মোবাইল টাওয়ারের মেগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে ঐ সার্ভারের সাথে আমাদের মোবাইলের সংযোগ স্থাপন হয় বিধায় আমরা মোবাইলে সকল তথ্য দেখতে পাই।
উপরের চিত্রের ডানপাশে যে ঘরটি দেখতে পাচ্ছেন সেটি হচ্ছে গুগল ডাটা সেন্টার, যেখানে গুগল এর যাবতীয় তথ্য ও ফাইল সংরক্ষণ করা রয়েছে। ডাটা সেন্টার থেকে ফাইভার ক্যাবল এর মাধ্যমে পানির ও মাটির নিজ দিয়ে নেওয়া যে ক্যাবল দেখতে পাচ্ছেন সেগুলো পৃথিবীর সকল দেশে ছড়ি ছিটিয়ে রয়েছে। এই ক্যাবলগুলোর মধ্যে দিয়েই মূলত গুগল এর সকল তথ্য যাওয়া আসা করে।
উপরের চিত্রে ভালোভাবে দেখুন, গুগল ডাটা সেন্টার হতে বিভিন্ন ধরনের ফাইল ফাইভার ক্যাবল দিয়ে প্রথমে মোবাইলের টাওয়ারে প্রবেশ করছে। তারপর মোবাইল টাওয়ার ম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে গুগল সার্ভারের ডাটা বা ফাইল মোবাইলে প্রবেশে করছে।
এখন আপনার মনে আবার প্রশ্ন জাগতে পারে যে, তাহলে আমরা গুগল ও ইউটিউব ছাড়াও অন্যান্য ওয়েবসাইটের তথ্য কিভাবে দেখতে পাই? আসলে আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে যে সমস্ত ইন্টারনেট ব্যবহার করি সেগুলো কোন নির্দিষ্ট কোম্পানির নয়। আমাদের দেশের ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির ফাইভার ক্যাবল কানেকশন কেনার পর সেগুলো আবার আরেকটি সার্ভার তৈরি করে সবগুলোকে একত্র করে। তারপর সেখান থেকে ফাইভার ক্যাবল সংযোগ স্থাপন করে দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দেয় বলে বিশ্বের সকল ওয়েবসাইটের সাথে আমাদের কম্পিউটার ও মোবাইলের সংযোগ স্থাপিত হয় বিধায় আমরা সকল ধরনের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারি ।
Important
Thanks
প্রতিনিয়ত লোকজন ভিডিও করে নেটে ছাড়ছে এগুলোর জন্য কি আলাদা মেমোরি কার্ডের প্রয়োজন হয় বা ডাটা অডিও ভিডিও গুলো কোথায় অবস্থান করে জানার ইচ্ছা ছিলজানার ইচ্ছা ছিল
এগুলো প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সার্ভারে আপলোড হচ্ছে।
Much helpful 💟