মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়
বর্তমান সময়ে আমরা যারা এন্ড্রোয়েড স্মার্টফোন ব্যবহার করি তারা সবসময় একটা
সমস্যা সম্মুখীন হই আর তা হলো মোবাইলে বেশিক্ষণ চার্জ না থাকা। আর এই সমস্যা
আমাদের অনেক সময় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। নতুন হোক কিংবা পুরাতন সবাইকে এই
বিব্রতকর পরিস্থিতিতে কম বেশি পড়তে হয়।
অনেকে দেখা যায়, স্বল্প বাজেটের মধ্যে পুরাতন মোবাইল কিনতে গিয়ে এই সমস্যার
সম্মুখীন হোন বেশি। অনেকে বিক্রয় ডট কম এর মত বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য
প্ল্যাটফর্মের সন্ধান না পেয়ে অন্য অনলাইন বা অফলাইন উৎস থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড
মোবাইল ক্রয় করে। পরবর্তীতে ব্যাটারি সহ আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হোন।
তবে এই আর্টিকেল আমি আলোচনা করবো, নতুন কিংবা পুরাতন যে কোন মোবাইলের ব্যাটারি
ভালো রাখার উপায় যার ফলে আশা করি আপনি এবং আপনার পরিবার অনেক উপকৃত হবেন। সেই
সাথে আলোচনা করবো ১২ টি পরীক্ষিত কৌশল যা আপনার মোবাইলের ব্যাটারির লাইফ বৃদ্ধিতে
কার্যকর ভুমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়
মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় বলতে আমরা যা বুঝি তা হচ্ছে নিয়মিত চার্জ
দেয়া। এই চার্জ দেয়ার পাশাপাশি আরো অনেক বিষয় আছে যা আমাদের অবশ্যই জানা উচিত এবং
প্রয়োজন বটে। আজ সেই সকল জানা অজানা সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
১. চার্জিং এবং ডিসচার্জিং সাইকেল
স্মার্ট ফোনের লাইফ কিভাবে বাড়াতে হয় তার জন্যে প্রথমে আপনাকে জানতে হবে, চার্জিং
এবং ডিসচার্জিং যে সার্কেল আছে সেই সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। প্রতিটা ব্যাটারি
প্রস্তুতকারক কোম্পানি লিথিয়াম ব্যাটারি তৈরিতে একটা থাম্ব রুল অনুসরণ করে।
আপনি যদি ৪০০ চার্জ সার্কেল সম্পূর্ণ করেন তাহলে ২০% চার্জ আপনার ডিগ্রেড হতে
পারে। কেবল ৮০ শতাংশ চার্জ অবশিষ্ট থাকে ৪০০ সাইকেল সম্পূর্ণ করার পরও। এখন
প্রশ্ন আসে ১ চার্জ সার্কেল বলতে কি বুঝায়? ব্যাটারি শূন্য থেকে ১০০ শতাংশ পূর্ন
হওয়াকে এক চার্জ সার্কেল বলা হয়।
তাহলে পার্শিয়াল বা হাফ চার্জিং বলতে কি বুঝায়? ব্যাটারি শূন্য থেকে ৫০ শতাংশ
পুর্ণ হওয়াকে পার্শিয়াল বা হাফ চার্জিং বলে। দুইবার যখন আপনি এই পার্শিয়াল বা হাফ
চার্জিং সম্পন্ন করবেন তখন তা ১ চার্জ সাইকেল হিসেবে গণ্য হবে।
মোবাইল বিষয়ে আরো জানুন—
ঠিক যেমনটা আমরা যদি পরিমিত পরিমাণে ঘুমিয়ে নিজেকে রিচার্জ অনুভব করি ঠিক তেমনি
ব্যাটারির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। পরিমাণে কম বা অতিরিক্ত ঘুম যেমন আমাদের
মনস্তাত্ত্বিক এবং শারীরিক বিরুপ প্রভাব ফেলে ঠিক তেমনটি ব্যাটারির ক্ষেত্রেও
প্রযোজ্য।
যদি আপনি ব্যাটারিকে একটি মানুষরুপে কল্পনা করেন তবে সে ৫০ শতাংশ চার্জিং তা
সবচেয়ে বেশি সন্তোষজনক এবং কার্যকরী হয়। যদি ব্যাটারির চার্জ ১০ শতাংশের নিচে
থাকে, তাহলে ব্যাটারির স্বাস্থ্য খুব একটা বেশি ভালো হয় না। আবার যদি ৯৫ শতাংশের
উপরে থাকে তাহলে ব্যাটারি খুব স্ট্রেস বা বিষন্ন থাকে, সেই রকম পারফরমেন্স দিতে
পারে না।
তাই অতিরিক্ত কম এবং বেশি লেভেলের চার্জিং কোনটাই ব্যাটারির জন্য মঙ্গল বা
কল্যানকর নয়। তাই সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে পার্শিয়াল চার্জিং করা। এর মানে হচ্ছে, যখন
আপনার মোবাইলে ২০ শতাংশ চার্জ অবশিষ্ট থাকবে ঠিক তখনই আপনি আপনার মোবাইলে চার্জ
দেয়া শুরু করুন এবং যখন তা ৯০ শতাংশে পৌছেবে তখন চার্জ দেয়া বন্ধ করে দিন।
ব্যাটারির লাইফ রক্ষা এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি
টিপস, যা অধিকাংশ মানুষ জানেন না। ধারনা করা হয়, এই পদ্ধতিতে ব্যাটারি চার্জ করলে
ব্যাটারির লাইফ ২০ শতাংশ বেড়ে যায়। অবশ্যই আপনিও চেষ্টা করে দেখতে পারেন!
২. ফাস্ট চার্জিং
ক্রেতার চাহিদার কথা মাথায় রেখে এখন অনেক মোবাইল হ্যান্ডসেট কোম্পানি তাদের ফোনে
ফাস্ট চার্জিং অফার করে থাকে এবং খুব জোড়ালো ভাবে প্রচারণা করে থাকে। এমনকি অনেক
রিভিউ ব্লগার এবং ইউটিউবার খুব গুরুত্বের সাথে রসালো উপায়ে আপনাদের সামনে
উপস্থাপন করতে থাকে ২৫-৩০ মিনিটের মধ্যে পুরোপুরি চার্জ সম্পন্ন হয়ে যায়, যা শুনে
আপনিও বিমোহিত হয়ে যান এবং সেই ফোন কেনার প্রবণতা সৃষ্টি হয়।
কিন্তু সত্য বলতে তা আসলে আপনার মোবাইল ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকর। আপনি কি জানেন?
আপনি আপনার মোবাইলে যত বেশি ফাস্ট চার্জিং করবেন তা আপনার মোবাইলের ব্যাটারির উপর
তত বেশি স্ট্রেস বা চাপ সৃষ্টি করে। আর এই চাপ ব্যাটারিতে খুব হিট বা উত্তাপ
সৃষ্টি করে যার ফলে ব্যাটারি অস্বাভাবিক গরম করে তুলে।
একটা কথা অবশ্যই মনে রাখবেন এই হিট বা উত্তাপ ব্যাটারির সবচেয়ে বড় শত্রু। চার্জ
দেয়ার সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন যাতে ব্যাটারি অতিরিক্ত গরম হয়ে যান। সে কারণে
আমার পরামর্শ হচ্ছে, আপনি যদি মোবাইল কাভার ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তা
মোবাইল থেকে খুলে ব্যাটারি চার্জ দিবেন।
হ্যা! ফাস্ট মোবাইল চার্জিং আপনার সময় বাচায় ঠিকই কিন্তু আপনার মোবাইলের
ব্যাটারিকে অনেক বেশি ক্ষতি করে। তবে আপনি আপনার প্রয়োজনে এবং কাজের সুবিধার্থে
ফাস্ট চার্জিং করতে পারেন, কিন্তু আপনি যদি স্লো বা ধীর গতিতে চার্জিং করেন তবে
আপনার ব্যাটারির লাইফ অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
যদি বিশ্বাস না হয়ে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই পরখ করে দেখতে পারেন। একই ব্যাটারি
আপনি ফাস্ট বা দ্রুত চার্জিং এর সাথে এবং আরেকবার স্লো বা ধীর গতিতে চার্জিং এর
সাথে করতে পারেন এবং এই দুই এর কার্যকারীতা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
যে মোবাইল ব্যাটারিকে আপনি স্লো চার্জিং করবেন তা অনেকদিন ধরে কার্যকর
থাকবে। অবশ্যই! আপনার এই অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু
!
৩. ওভার নাইট চার্জিং
একটা প্রশ্ন আপনার অবশ্যই মাথায় ঘুরপাক খায় তা হচ্ছে, ওভার নাইট চার্জিং আপনার
মোবাইলের কোন ক্ষতি করে কিনা? এর প্রশ্নের উত্তরে আমার মতামত হচ্ছে, যদি স্লো
চার্জিং হয়, তবে নির্দিষ্ট সময় পরে, উত্তাপ সৃষ্টি হবার ফলে মোবাইল ব্যাটারি গরম
হয়ে যেতে পারে, যা অবশ্যই আপনার লক্ষ্য রাখতে হবে।
তাছাড়া ক্ষতি হবার ব্যাপক কোন সম্ভাবনা নেই, তবে ঘন ঘন উত্তাপ সৃষ্টির ফলে
ব্যাটারির লাইফ এবং কার্যকারিতা কমতে পারে। আবার ওভার নাইট চার্জ দেওয়ার ফলে
বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে সমস্যা সম্মুখীন হবার রিস্ক থেকেই যায়।
কিন্তু যদি ফাস্ট চার্জিং হয় সেক্ষেত্রে যদি ৩০-৪০ মিনিটের মধ্যে যদি ২০-৮০ শতাংশ
চার্জ সম্পন্ন করে তাহলে ওভার নাইট চার্জিং এর কোন প্রযোজন নেই। আপনি আপনার
প্রয়োজন এবং সুবিধাজনক সময়ে চার্জিং করতে পারেন।
৪. অরিজিনাল এবং জেনুইন চার্জার ব্যবহার করা
অরিজিনাল এবং জেনুইন চার্জার ব্যবহার করা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমার মত
ভুক্তভোগী হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। আপনার মোবাইলের সাথে যে চার্জার দেয়া হয় শুধু
এবং শুধুমাত্র সেই চার্জারই ব্যবহার করুন। এটা যে কতটা গুরুত্বপুর্ণ তা আপনার
কল্পনার বাইরে।
আমাদের অনেক থার্ড পার্টি কোম্পানি আছে যারা ব্যবসায়িক স্বার্থে স্বল্প মূল্যে
চার্জার এবং ব্যাটারি প্রস্তুত করে থাকে। সামান্য কিছু টাকা বাচাতে যা ব্যবহার
করা একদমই উচিত হবে না। এর সবচেয়ে ক্ষতি হয়ে থাকে আপনার ব্যাটারির।
যদি কোন কারণে আপনার মোবাইল চার্জার খারাপ বা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে দুই চার পয়সা
বেশি দিয়ে হলেও অরিজিনাল জেনুইন চার্জার ব্যবহার করুন। এমনকি যদি আপনার বাসা এবং
অফিসের জন্য আলাদা সেট চার্জার প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই আসল জেনুইন চার্জার
ব্যবহার করুন।
একই কথা প্রযোজ্য, ব্যাটারির সাথে থাকা চার্জার কেবল এর ক্ষেত্রে। এই বিষয় আসলেই
অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ আপনার ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়ী এবং কার্যকর করতে।
৫. চার্জিং এটমোস্ফিয়ার
সামান্য মোবাইল ব্যাটারি চার্জিং এর আলাদা কোন এট্মোসফিয়ার বা পরিবেশ দরকার আছে?
বিষয়টা শুনে আপনি একটু অবাক হচ্ছেন তাই না? প্রথমে আমিও শুনে খুব অবাক হয়েছিলাম।
জী, ঠিকই শুনছেন ।
মোবাইল চার্জিং এর জন্য আলাদা পরিবেশ খুবই গুরুত্ব বহন করে। তবে খুব বেশি ঠান্ডা
আবহাওয়া এবং গরম আবহাওয়ায় আপনার মোবাইল চার্জ দেয়া থেকে বিরত রাখুন। যেমন অনেকেই
চুলার পাশে অত্যাধিক তাপে রান্না করতে করতে মোবাইল ফোন ব্যাটারি চার্জে লাগিয়ে
গান শুনতে থাকেন। এটা মোবাইলের ব্যাটারির জন্য অনেকটা ক্ষতিকর।
লিথিয়াম ব্যাটারির জন্য আদর্শ তাপমাত্রা হচ্ছে ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে গবেষণা
বলছে, যদি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিকে ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রতিনিয়ত রাখা
হয় তাহলে প্রতি বছরে তা ২০ শতাংশ হারে তার ধারণক্ষমতা হারায়।তাই স্বাভাবিক
তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ায় ব্যাটারি চার্জ করতে চেষ্টা করুন।
৬. ডার্ক ওয়াল পেপার ব্যবহার করুন
যদি আপনার এন্ড্রোয়েড স্মার্টফোন ওলেড এবং এমোলোয়েড ডিসপ্লে দ্বারা তৈরি হয়ে থাকে
তাহলে চেষ্টা করুন ডার্ক থিম ব্যবহার করতে যা আপনার ব্যাটারীর চার্জকে
দীর্ঘস্থায়ী করবে। এক্ষেত্রে ডার্ক ওয়াল পেপার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।
ব্যাটারির চার্জকে দীর্ঘস্থায়ী বলতে যদি মোবাইল হ্যান্ডসেট আপনাকে বলে থাকে এই
মোবাইল ব্যবহারের ফলে আপনি এক চার্জ সাইকেল সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টা ব্যবহার করতে
পারবেন তাহলে কালো বা ডার্ক থিম/ ওয়ালপেপার ব্যবহারের ফলে আপনি সর্বোচ্চ ১২-১৪
ঘন্টা অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন।
কারণ লাইট বা মাল্টি কালারড থিম ব্যবহারের ফলে সেখান থেকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি
পরিমান আলো নিঃসরিত হতে থাকে, যা পরোক্ষভাবে আপনার ব্যাটারির চার্জ কে আস্তে
আস্তে নিঃশেষ করতে থাকে।
এমোলোয়েড ডিসপ্লে ভিতরে এল ই ডি অংশে কালো রঙ বা ডার্ক স্ক্রীন সেই আলোর নিঃসরণ
পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। মনে রাখবেন, এন্ড্রোয়েড স্মার্টফোনে ডিসপ্লে সবচেয়ে বেশি
ব্যাটারি অপচয় হয়। তবে আপনি যদি এমলয়েড ডিসপ্লে তে ডার্ক ওয়ালপেপার ব্যবহার করেন
তাহলে ধরে নিতে পারেন, সর্বোচ্চ ১০%-২০% ব্যাটারি আপনার ডিসপ্লে এর জন্য ব্যবহার
হবে।
বর্তমান সময়ে এমন কিছু মোবাইল পাবেন যেখানে ডার্ক মুড অপশন থাকে, প্রয়োজন অনুযায়ী
এই ডার্ক মুড অন অফ করতে পারবেন।
৭. মোবাইল ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
আমার বন্ধু এবং পরিবারে এমন কিছু ব্যাক্তি আছে যাদের দেখি মোবাইল ব্রাইটনেস
একবারে ১০০% দিয়ে রাখে যদিও তাদের চোখে তেমন কোন সমস্যা নাই, কিন্তু তারা কখনো
কমানোর প্রয়োজন অনুভব করে না। যা আসলেই আমার কাছে এখনো বোধগম্য নয়।
যদিও কিছুক্ষণ আগে আমি বলেছি, এই ডিসপ্লে মোবাইলের চার্জ সবচেয়ে বেশি নষ্ট করে।
যদি সম্ভব নাও হয়ে থাকে তবে চেষ্টা করুন ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা আপনার
মোবাইল ব্যাটারি সংরক্ষণে কার্যকরী পদক্ষেপ।
অটো-ব্রাইটনেস মুডে দিয়ে রাখতে পারেন কিন্তু লাইট সেন্সর আপনার ব্যাটারির চার্জ
বেশি খরচ করে। তবে সবচেয়ে উত্তম পন্থা হচ্ছে ম্যানুয়ালি ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রন করা,
যদি ব্যাটারির লাইফ আপনার কাছে আসলেই গুরুত্ব বহন করে।
যদি আপনি সূর্যালোকে ঘরে বাইরে থাকেন তাহলে ম্যানুয়ালি ব্রাইটনেস বাডিয়ে দিন আর
যদি ঘরে প্রবেশ করেন বা ডার্ক কন্ডিশনে থাকেন তাহলে ম্যানুয়ালি ব্রাইটনেস কমিয়ে
দেন।
৮. পাওয়ার সেভিং অপশন অন রাখুন
মনে করুন, আপনি এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন যেখানে আপনার ব্যাটারির
চার্জ ১০ শতাংশেরও অনেক কম। যেখানে আপনার ব্যাটারি রিচার্জ করার কোন অপশন নেই।
তখন আপনি কি করবেন?
জ্বি। অনেক এন্ড্রোয়েড মোবাইলে পাওয়ার সেভিংস অপশন থাকে যার ফলে আপনার পাওয়ার
ব্যাটারির পাওয়ার সেভিংস হতে পারে। এই পাওয়ার সেভিং অপশনের ফলে আপনার মোবাইলের
ব্রাইটনেস কমে যায়, রেজোল্যুশন, প্রসেসিং পারফরমেন্স কমে যায় এবং পাওয়ার সেভ করার
প্রবণতা বেড়ে যায়।
৯. আপনার লোকেশন নিয়ন্ত্রণ করুণ
অনেক সময় আমাদের কাজের প্রয়োজনে আমরা জি পি এস ফাংশন অন করি। কিন্তু কাজ শেষে
আমরা হয়তোবা ভুলে যাই জি পি এস ফাংশন বন্ধ করতে। যার ফলে বিভিন্ন আপ্লিকেশন
আমাদের নেভিগেট করার উদ্দ্যেশে লোকেশন ট্র্যাকিং করে, ফলে অপ্রয়োজনে আমাদের
ব্যাটারির চার্জ শেষ হতে থাকে। তাই কাজ শেষ হওয়া মাত্র আপনি আপনার ডিভাইসের জি পি
এস ফাংশন বন্ধ করে ফেলুন।
১০. ডাটা কানেকশন এবং ওয়াই ফাই বন্ধ রাখুন
অনেকেই বিভিন্ন প্রয়োজনের তাদের মোবাইলের ডাটা কানেকশন এবং ওয়াইফাই ব্যবহার করেন
কিন্তু প্রয়োজন শেষে তাদের ডাটা কানেকশন এবং ওয়াই ফাই বন্ধ করতে ভুলে যান। এটা
প্রায়ই ঘটে যখন আমরা অফিস বা বাসা বাড়ীতে থাকি, যেখানে আপনার নিরবিচ্ছন্ন
ইন্টারনেট কানেকশন দরকার হয়ে পড়ে। আমরা ভুলে সেই কানেকশন সবসময় অন রাখি, যা
পরবর্তীতে আমাদের ব্যাটারির উপর বিরুপ প্রতিক্রিয়া পড়ে।
১১. সফটওয়ার এবং এপ্লিকেশন আপডেটে বিলম্ব করুন
অনেক সময় দেখা যায় আপনি যে হ্যান্ডসেট বা মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করেন তার
এন্ড্রোয়েড সিস্টেমে নতুন কোন আপডেট আসলে আপনি সাথে সাথে তা আপডেট দিয়ে দেন। এমন
কোন এপ্লিকেশন বা সফটওয়ার আপডেট আসলো আপনি সাথে সাথেই কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই
আপডেট দিয়ে দেন।
এন্ড্রোয়েড সিস্টেম, এপ্লিকেশন বা সফটওয়ারে যখন কোন আপডেট আসে তখন সেই সংশ্লিষ্ট
কোম্পানি কিছু ট্রায়াল এন্ড ইরোর প্রসেসিং এর ভিতর দিয়ে যায়। অনেক সময় টেকনিক্যাল
ডিবাগ ধরা পড়ে যা পরবর্তীতে পুরো সিস্টেমকে ডিফল্টেড করে দেয়।
তাই আমাদের পরামর্শ হচ্ছে অপেক্ষা করুন, ধৈর্য্য ধরুন। যতক্ষন না পর্যন্ত সবকিছু
ফিক্স হচ্ছে ততদিন অপেক্ষা করুন, বিলম্ব করুন। সে ট্রায়াল ইরোর পিরিয়ড শেষ হবার
পর অনেক সময় দেখবেন আপনার হ্যান্ডসেট অটোমেটিকলি আপডেটেড হয়ে গিয়েছে আপনার কিছু
করা লাগবে না।
অনেক সময় এই সফটওয়ার বা এপ্লিকেশন আপডেট পরোক্ষভাবে মোবাইল ব্যাটারি ক্ষতি করে
থাকে-যা অনেকটা আমাদের দৃষ্টির অগোচরেই হয়ে থাকে।
১২. সঠিক এপ্লিকেশন বা সফটওয়ার নির্বাচন করুন
বর্তমানে দিনের অধিকাংশ সময়ে আমরা ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম
ব্যবহারে এতো বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছি যে আমাদের অগোচরে এই ফেসবুক অ্যাপ এবং
ম্যাসেঞ্জারের মত অন্যান্য কিছু অ্যাপ আমাদের ব্যাটারির ক্ষতি সাধন করছে।
যদি আপনার স্মার্ট ফোনে ফেসবুক ব্যবহার করতেই হয়, সম্ভব হলে ফেসবুক লাইট অ্যাপটা
ইনস্টল করুন এবং ব্যবহার করুন। এরকম আরো অনেক এপ্লিকেশন পাবেন যা আপনার মোবাইলের
ব্যাটারিকে পরোক্ষভাবে ক্ষতি করতে পারে। তাই সেগুলো জানুন এবং সম্ভব হলে পরিহার
করুন।
১৩. ব্যাটারি সেভিংস এপ্লিকেশন ব্যবহার পরিহার করুন
যারা দীর্ঘদিন ধরে একই হ্যান্ডসেট বা ডিভাইস ব্যবহার করেন বা করছেন তারাই মুলত এই
সমস্যার সম্মুখীন হন বা হচ্ছেন। তবে নতুন মোবাইল বা হ্যান্ডসেটে এই সমস্যা খুব
একটা দেখা যায় না। সমস্যা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে মোবাইল
ব্যাটারির আয়ু ধীরে ধীরে হ্রাস পায় এবং ব্যাটারির চার্জ দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
তখন অনেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারি থার্ড পার্টি ব্যাটারি লাইফ সেভিংস এপ্লিকেশন
দিকে বেশি ঝুকে পড়ে এবং অনেকটা সে অ্যাপের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
কিন্তু বর্তমানে যে মোবাইল প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোতে যে টেকনোলজি ব্যবহার করা
হয় এর জন্য থার্ড পার্টি ব্যাটারি লাইফ সেভিংস এপ্লিকেশন খুব একটা বেশি কার্যকরী
নেই বললেও চলে। এসব এপ্লিকেশন ব্যবহারের ফলে মোবাইল পরোক্ষভাবে ক্ষতি হয় বেশি।
তবে যদি খুব বেশি সমস্যা হয়, তাহলে কিছু দাম দিয়ে হলেও ব্যাটারি রিপ্লেসমেন্ট
কোঁড়া হবে সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমানের কাজ।
শেষ কথা
আশা করি আপনার মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ এবং
পরিষ্কার ধারনা পেয়েছেন এবং উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে আপনি মোবাইল
ব্যাটারির লাইফ এবং কার্যকারিতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করতে পারবেন।
অসাধারন উপস্থাপন, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ব্লগার সাইটে আমার কাষ্টম ডোমেইন যোগ করেছি। গুগল ব্রাউজারে সাইটের নাম লিখে এন্টার চাপলে This site can’t be reached শো করে। তবে নামের আগে যোগ করে wwww এন্টার করলে সাইট ভিজিট করে। যেমন আপনার সাইট চেক করলাম www ব্যতিত নাম লিখে এন্টার চাপলে সাইট ভিজিট হচ্ছে। আমারটাও এই রকম করতে চাই। কিভাবে সমাধান করবো?
ডোমেইন ব্লগে যুক্ত করার সময় www সহ যুক্ত করতে হয়। যুক্ত হওয়ার পর ডোমেইনকে www তে রিডাইরেক্ট করতে হয়।
আমার মনেহয় আপনি ঠিকমত ডোমেইন সেট করতে পারেননি। তাছাড়া নতুন ডোমেইন যুক্ত করার পর কিছু সময় এ ধরনের সমস্যা করে।
আপনার সমস্যাটি এখনো সমাধান না হলে আপমাদের ব্লগে একটি পোস্ট আছে। পোস্টটি পড়লে বুঝতে পারবেন।
ধন্যবাদ...
জ্বী আপনার বিবরণ অনুযায়ী করেছিলাম। তবুও কাজ হয়নি।
এখানে আর কিছু নেই। এই স্টেপগুলো ঠিকমত করলে অবশ্যই কাজ করবে।
অনেক ভালো লিখেছেন। আপনার লেখা ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ... সাথে থাকুন।