দোয়া মাসুরা বাংলা উচ্চারণ

দোয়ায়ে মাসূরা হল এমন একটি দোয়া যা পবিত্র কুরআন থেকে নেওয়া এবং এই দোয়া সম্পর্কে নবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) নিজে বলেছেন। প্রত্যেক সালাতের (নামাজ) শেষ রাকাতে তাশাহহুদ ও দুরূদে ইব্রাহীমীর পরপরই এই ধরনের দোয়া পাঠ করা হয়, তা ফরজ হোক বা সুন্নত।

দোয়া মাসুরা এর মাধ্যমে নামাজে আল্লাহর কাছে গুনাহের মাফ চাওয়া হয়। অনেক লোক বিশেষ করে শিশুরা এই দুআ শিখতে অসুবিধার সম্মুখীন হয়। তবে এটি মনে রাখা কঠিন নয় যদি আমরা প্রতিদিন ৩/৪ বার পড়ি তবে এটি কয়েক দিনের মধ্যে মনে রাখা সম্ভব হবে।

এখানে আমরা বাংলা অনুবাদ সহ Dua Masura Bangla শেয়ার করেছি। কাজেই আপনি খুব সহজে এই দোয়াটি মনে রাখতে পারবেন। তাছাড়াও আমরা এই দোয়াটি ইমেজ আকারে দিয়েছি, যাহার ফলে সহজে আপনার মোবাইলে সেভ করে রাখতে পারবেন।

দোয়া মাসুরা (Dua Masura) কি?

নামাজের শেষ বৈঠকে দোয়া মাসুরা পড়তে হয়। দোয়ায়ে মাসুরা শেষে সালাম ফেরাতে হয়। এখানে পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। বরং একটি মাসনুন দোয়া পড়লেই হয়। এমনকি একাধিক দোয়াও পড়া যায়।

হাদিস শরিফে এসেছে, অতঃপর (দরুদ পাঠের পর) যে দোয়া ইচ্ছে, সেটা পড়বে (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪০২)। অনেকেই মনে করেন দোয়া মাসুরা বলতে শুধু ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু’ বুঝায়। আসলে বিষয়টি এমন নয়, বরং যে কোন দোয়াই পড়া যায়।

দোয়া মাসুরা বাংলা উচ্চারণ

اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি জুলমান কাসিরা। ওয়ালা ইয়াগ ফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা। ফাগফির লি, মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা; ওয়ার হামনি, ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি নিজের উপর অনেক জুলুম করেছি। আর আপনি ছাড়া গুনাহ ক্ষমাকারী আর কেউ নেই। আপনি নিজ অনুগ্রহে আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি রহম করুন। নিঃসন্দেহে আপনিই ক্ষমাকারী, করুণাময়।

দোয়া মাসুরা পড়ার নিয়ম

আমরা প্রত্যেক নামাজের শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু এবং দুরূদে ইব্রাহিম পাঠ করার পর দোয়া মাসুরা পড়ি। নামাজে নিয়ত করার পর সানা পড়তে হয়। তারপর বিসমিল্লাহ বলে সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হয়। তারপর অন্য যে কোন সূরা পড়তে হয়।

তারপর রুকুতে গিয়ে সুবহান-না রাব্বিয়াল আজিম পাঠ করতে হয়। তারপর রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হয়। এভাবে যদি দুই রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাহলে দুই রাকাত পড়ার পর বসে আত্তাহিয়াতু পড়তে হয়। তারপর দুরুদে ইব্রাহিম পড়তে হয়। অতঃপর সালাম ফেরানোর পূর্বে দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ করতে হয়।

দোয়ায়ে মাসুরার ফজিলত

প্রতিটি দোয়া আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বলতে পারি দোয়া আমাদের জীবন এবং ইবাদতের সর্বোত্তম কাজকে পরিবর্তন করে। তাই আমরা যখন নামাজ পড়ি, তখন নামাজের মধ্যে যে কোনো দোয়া পাঠ করতে হবে যা স্মরণ হয়।

কারণ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন দুআ হলো ইবাদতের জীবন। মহানবী মুহাম্মাদ (সাঃ) আমাদেরকে এই দোয়া শিখিয়েছেন যাতে করে আমরা আরো বেশি করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারি।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর থেকে বর্ণিত যে, হজরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) হুজুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ‘আমাকে এমন কিছু দোয়া বলুন যা দ্বারা আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারি।

অতঃপর হুজুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দুআ পাঠ করতে বললেন (সহীহ আল-বুখারী ৬৩২৬)। এই দোয়াটি মুহাম্মাদ (সাঃ) খলিফা হযরত আবু বকর (রাঃ)-কে শিখিয়েছিলেন।

শেষ কথা

নামাজে দোয়া মাসুরা পাঠ করা আমাদের জন্য শুধু একটি সুন্নতই নয়, বরং এটি আল্লাহর নিকট রহমত, হেদায়েত ও নিরাপত্তা চাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। যারা এখনও দোয়াটি শিখতে পারেননি, তারা সহজ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ দেখে এটি আত্মস্থ করতে পারেন।

নিয়মিত আমল করলে এটি মুখস্থ করাও সহজ হয়ে যাবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই দোয়াটি বোঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন!

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url