আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। একজন মুমিনের জীবনে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। আর এই নামাজে সূরা ফাতিহার পাশাপাশি অন্য সূরাগুলোও তিলাওয়াত করা হয়।
আজ আমরা জানবো নামাজের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি সূরা সম্পর্কে, যা আপনার নামাজকে আরও সুন্দর ও অর্থবহ করে তুলবে। এই সূরাগুলো শুধু নামাজের জন্যই নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনেও পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। তাই চলুন, জেনে নেওয়া যাক নামাজের জন্য ১০ টি সূরা সম্পর্কে।
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা
অনেকেই জানেন না যে, কিছু নির্দিষ্ট ছোট সূরা রয়েছে যা সহজেই মুখস্থ করা যায় এবং নামাজে পড়ার জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এই ব্লগ পোস্টে আমরা এমনই ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সূরা সম্পর্কে আলোচনা করব, যা নিয়মিত নামাজে পড়া সহজ এবং ফজিলতপূর্ণ।
অর্থ: পরম করুণাময়, অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। সমস্ত প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য। যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। যিনি বিচারদিনের মালিক। আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি এবং শুধু তোমারই সাহায্য চাই। আমাদেরকে সরল পথ দেখাও। তাদের পথ, যাদের তুমি নিয়ামত দিয়েছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাজিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট। আমিন।
অর্থ: আপনি কি দেখেননি আপনার রব হাতিওয়ালাদের সাথে কি আচরণ করেছিলেন? তিনি কি তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেননি? এবং তিনি তাদের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি প্রেরণ করেছিলেন। যারা তাদের উপর কাঁকর পাথর নিক্ষেপ করছিল। অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দিলেন।
অর্থ: কুরাইশদের আসক্তির কারণে, তাদের শীত ও গ্রীষ্মের সফরের আসক্তির কারণে, সুতরাং তারা যেন এই ঘরের রবের ইবাদত করে, যিনি তাদেরকে ক্ষুধার সময় খাদ্য দিয়েছেন এবং ভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন।
অর্থ: আপনি কি তাকে দেখেছেন, যে দ্বীনকে মিথ্যা বলে? সে তো সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে ধাক্কা দেয় এবং দরিদ্রকে খাদ্য দিতে উৎসাহ দেয় না। সুতরাং দুর্ভোগ সেসব সালাত আদায়কারীর, যারা তাদের সালাত সম্পর্কে উদাসীন। যারা লোক দেখানোর জন্য সালাত আদায় করে এবং নিত্য ব্যবহার্য্য জিনিসপত্র দেয়া থেকে বিরত থাকে।
উচ্চারণ: ক্বুল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরূন। লা আ'বুদু মা তা'বুদূন। ওয়ালা আনতুম 'আবিদূনা মা আ'বুদ। ওয়ালা আনা 'আবিদুম মা 'আবাত্তুম। ওয়ালা আনতুম 'আবিদূনা মা আ'বুদ। লাকুম দীনুকুম ওয়া লিয়া দীন।
অর্থ: বলুন, ‘হে কাফেরগণ! আমি তার ইবাদত করি না, তোমরা যার ইবাদত কর। এবং তোমরাও তার ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। আর আমি তার ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা করে আসছ। এবং তোমরাও তার ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন এবং আমার জন্য আমার দ্বীন।
অর্থ: যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন, তখন আপনি আপনার রবের প্রশংসাসহ তার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি তওবা কবুলকারী।
অর্থ: আবু লাহাবের দুই হাত ধ্বংস হোক এবং সে নিজেও ধ্বংস হোক। তার ধন-সম্পদ ও তার উপার্জন তার কোনো কাজে আসেনি। শীঘ্রই সে লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে। এবং তার স্ত্রীও, যে জ্বালানি বহন করে। তার গলায় খেজুর গাছের ছালের পাকানো রশি থাকবে।
অর্থ: বলুন, তিনিই আল্লাহ, এক ও অদ্বিতীয়। আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।
অর্থ: বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের রবের। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, এবং রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে, যখন তা গভীর হয়। এবং গিটগুলোতে ফুঁৎকার দেয় তাদের অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে।
অর্থ: বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের রবের, মানুষের অধিপতির, মানুষের উপাস্যের, আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়, জিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।
শেষ কথা
পরিশেষে, নামাজের জন্য এই ১০টি সূরা জানা ও আমল করা আমাদের প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কারণ সূরা ছাড়া নামাজ আদায় হয় না। এই সূরাগুলো আমাদের নামাজকে যেমন সুন্দর করে, তেমনি আল্লাহর নৈকট্য লাভেও সাহায্য করে।
আসুন, আমরা সবাই এই সূরাগুলো মুখস্থ করি এবং নিয়মিত নামাজে তিলাওয়াত করি। প্রতিদিন দেখে দেখে তিলাওয়াত করলে খুব সহজে মুখস্ত হয়ে যাবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন।